তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি, মুশফিকের হাফসেঞ্চুরি করেও হেরে গেল বাংলাদেশ

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান ফকির
বৃহস্পতি, 01.06.2017 - 11:12 PM
শুরুতে ইংল্যান্ডকে ধাক্কা দিয়েছিলেন মাশরাফি-মোস্তাফিজ। সেই ধাক্কা সামলে দুর্বার গতিতে স্বাগতিকদের এগিয়ে আলেক্স হেলস আর জো রুট জুটি। তাদের দু’জনের জুটিতে ১৫৯ রান ওঠার পর অনিয়মিত বোলার সাব্বির রহমান এসে ভাঙন ধরান; কিন্তু তাতে লাভ হলো না কিছুই। জো রুট আর ইয়ন মরগ্যানের ব্যাটে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ত্যাগ করলো স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশের বোলাররা ছিলেন পুরোপুরি নখদন্তহীন। মোস্তাফিজ দু’একটি বল ভালো করলেও সেগুলো উইকেট পাওয়ার মত হয়নি। ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কাঁপন ধরিয়ে দেয়ার মত সেই রুবেলকে আজ দেখা যায়নি। প্রচুর ফুলটস আর আলগা বল দিয়েছেন। যেখানে ইংল্যান্ড খেলিয়েছেন পাঁচ পেসার, সেখানে আমরা খেলালাম তিন পেসারকে।
একইসঙ্গে একজন স্পেশালিস্ট বোলার ছিল কম। মাত্র চারজন বোলার নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। এ কারণে অকেশনাল মোসাদ্দেক হোসেন, সৌম্য সরকার কিংবা সাব্বির রহমানকে ব্যবহার করতে হয়েছে মাশরাফিকে। এর মধ্যে আবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে অব্যবহৃত রেখে দিতেও দেখা গেলো। কখনও কখনও অভিজ্ঞতা কাজ দেয়। মাহমুদউল্লাহর অভ্জ্ঞতাকে কাজে লাগানো যেতো।
বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পিছিয়েছে সাকিব আল হাসানের কারণে। ব্যাট হাতে শেষ দিকে মারমুখি হওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা তিনি হতে পারেননি। বল হাতে তার ওপর ছিল অনেক বেশি ভরসা; কিন্তু ৮ ওভার বল করে তিনি ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে সমীহ আদায় করা দুরে থাক, কোনো প্রভাবই বিস্তার করতে পারেননি। উল্টো ৭.৭৫ ইকনোমি রেটে রান দিয়েছে ৬২টি। এই একটি ক্ষেত্রেই পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। হার মেনেছে ১৬ বল বাকি থাকতেই।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন মাশরাফি। ফিরিয়েছিলেন জেসন রয়কে। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন জো রুট আর আলেক্স হেলস। গড়েন ১৫৯ রানের জুটি। নিয়মিত বোলাররা যখন কিছুই করতে পারছিলেন না।
বাধ্য হয়েই অনিয়মিত বোলার সাব্বিরের হাতে বল তুলে দিলেন মাশরাফি। আর তাতেই একটা জুটি ভাঙতে পারে ইংল্যান্ডের। ৮৬ বলে ব্যক্তিগত ৯৫ রান করে সানজামুলের (পরিবর্তিত ফিল্ডার) হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হেলস।
কেনিংটন ওভালে বাংলাদেশের দেওয়া ৩০৬ রানে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। দলীয় ৬ রানেই সাজঘরে ফিরে যান জেসন রয়। মাশরাফির করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল স্কুপ করার চেষ্টায় শর্ট ফাইন লেগে মুস্তাফিজুর রহমানের অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হন জেসন রয়।
দ্রুত উইকেটে হারিয়ে আর কোন ঝুঁকি না নিয়ে হেলস ও রুট দ্রুত গতিতে রান তুলে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। মাশরাফি, মোস্তাফিজ, রুবেলদের দেখে শুনে খেলে ওপেনার হেলস এরই মধ্যে তুলে নেন তার নবম অর্ধশত। এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে ৫ রান দূরে থাকে সাব্বিরের বলে সুইপ করলে সানজামুলের তালুবন্দি হন।
১৬৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর বাকি কাজটা রুট-মরগ্যানের অপরাজিত ১৪৩ রানের জুটিই ইংল্যান্ডকে জয় উপহার দেয়।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি মুশফিকের হাফসেঞ্চুরির উপর ভর করে ৩০৫ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।