শেরপুরে সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কনান্ডার আবুবকরের মৃত্যু বার্ষিকী পালন

স্টাফ রিপোর্টার
বুধ, 03.07.2024 - 07:54 PM
Share icon
Image

শেরপুরে প্রয়াত সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু বকরের ১৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী ৩ জুলাই সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পারিবারীকভাবে পালিত হয়েছে। 
এ কর্মসূচিতে সার্বিক সহযোগিতা ও নির্দেশনা দেন সাবেক সফল পৌর মেয়র ও দু'দফায় নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবীর রুমান।
সকাল থেকেই কোরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে দুপুরে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবীর রুমান এর নির্দেশনায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আলহাজ্ব মোঃ খোরশেদ আলম ইয়াকুব এর তত্বাবধানে পৌর শহরস্থ বয়ড়া পরানপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার এতিম ও অসহায় ছাত্র ছাত্রীদেকে দুপুরে খাবার পরিবেশন করেন।

অপরদিকে  ব্যাক্তিজীবনে জিবদ্বশায় তিনি অত্যন্ত সহজ সরল,  সাবলিল ও সুমিষ্টভাষী ছিলেন। তিনি জীবনে কখনও কারোর উপকার ছাড়া অপকার তিনি করেননি। আর তাইতো তার সুনাম পুরো জেলা ব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছেন।

এই মহান মানুষটি শেরপুর জেলার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৩৩ ইং সালে  জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মরহুম মফিজ উদ্দিন শেখ এবং মাতার নাম ছামরতে বানু। পিতা মাতার অত্যন্ত আদরের সন্তান ছিলেন এই মহান মানুষটি। তিনি ০৬ জন পুত্র সন্তান ও ০৩ জন কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। তিনি পৌর শহরস্থ মীরগঞ্জ মহল্লায় তার নিজ বাড়ীতে বসবাস করতেন। 

তিনি একাধারে শেরপুর জেলা আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন ছিলেন। এছাড়াও তিনি জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমন্ডার,  ব্যাবসায়ী সংগঠন শেরপুর চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি শেরপুর ইউনিটের আজীবন সদস্য, জেলা মিল মালিক সমিতির অন্যতম সদস্য, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ও নতুন বাসটার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ী স্থাপনের একমাত্র উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি বহু মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরীতে সরাসরি নগদ অর্থ প্রদান করে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। তিনি স্বাধীকার আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, সৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, আন্দামান ফেরত বিপ্লবী রবি নিয়োগীর সাথে আন্দোলন, বাংলার অগ্নিকণ্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী'র সাথে রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনার জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (রেসকোর্স ময়দানের)  সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। তিনি সরাসরি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পুড়া কায়সায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ট্রেনিং প্রাপ্ত হন। ট্রেনিং গ্রহন শেষে বাংলাদেশে এসে শিশু হুমায়ুন কবীর রুমান বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুমান ও অন্যান্য সন্তানদের রেখে ১১ নং সেক্টর কর্ণেল তাহেরের নেতৃত্বে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। 

একবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জামালপুর জেলায় এসেছিলেন তখন তিনি জামালপুর জেলাতেও বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে পেয়েছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু বাক্কার বলে ঢাকতেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও চাচা বলে সম্বোধন করতেন।

জীবদ্দশায় তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। ব্যাক্তি জীবনেও তিনি একজন সফল ব্যাবসায়ী ছিলেন। তার ইটের খোলা ছিল। সেখান থেকে পুরো ময়মনসিংহ বিভাগ ব্যাপী রপ্তানী করা হত। এই মহান মানুষটি ২০০৬ সালের ৩রা জুলাই স্ত্রী সন্তান, অসংখ্য আত্বীয় স্বজন গুণগ্রাহীকে রেখে এই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেন। ( ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহির রাজিউন)

পরবর্তীতে তারই যোগ্য উত্তরসূরী সেই মুক্তিযোদ্ধের সময় শিশু সন্তানটিও তার বাবার মতন জননন্দিত জননেতা হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। তিনি সাবেক সফল পৌর মেয়র ও দু'দফায় নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবীর রুমান। আরেক সন্তান মোঃ আব্দুল মতিন জেলা যুবলীগের অন্যতম নেতা হিসেবে প্রতিয়ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। তার ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা থেকে বেড়ে উঠা, ৯০ এর আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী আরেক নেতা বর্তমান জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন আহবায়ক আলহাজ্ব মোঃ খোরশেদ আলম ইয়াকুব। সর্বোপরী এই পরিবার হচ্ছে আওয়ামী পরিবার।
আজকের তার এই মৃত্যু বার্ষিকীতে সকলের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে মাগফেরাত ও দোয়া কামনা করেছেন।

Share icon