শেরপুরে চালকল শিল্পকে বিপর্যয় থেকে রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
বুধ, 28.03.2018 - 03:41 PM
Share icon
  স্টাফ রিপোর্টার।। মৌসুমের শুরুতে ধানের মূল্য বেশি থাকায় চালের মূল্যও বৃদ্ধি পায় এই অবস্থায় আমদানিকৃত চালের ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করায় বাজার স্থিতিশীল হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ব্যাপক পরিমাণ বিদেশি চাল আমদানি করায় দেশীয় চাল কলগুলোতে উৎপাদিত চাল বিক্রি বন্ধের পথে। এতে করে অসম প্রতিযোগিতা ও ক্রমাগত লোকসানের ফলে দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম শেরপুর জেলার বেশিরভাগ চালকল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে-এমন দাবি জেলা চালকল মালিক সমিতির।
শহরের বটতলা এলাকায় জেলা চালকল মালিক সমিতি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রৌশন। এসময় লিখিত বক্তব্যে বলা হয় , শেরপুর জেলায় প্রায় ২৫টি অটোমেটিক, ৫০টি সেমি-অটোমেটিক এবং ৬০০টি হাসকিং চাউল কল মালিক ধান থেকে চাউল তৈরী করে মানুষের খাবার যোগ্য করে তা বাজারজাত করণসহ সরকারের আপদকালীন সংগ্রহ কাজে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করে আসছে। মিল মালিকগণ ব্যাংকসহ নিজ উদ্যোগে কোটি-কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যেখানে প্রত্যক্ষভাবে নারী-পুরুষ সহ হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সাথে পরিবহণ, আড়ৎদার, কৃষক ও খুচরা বিক্রেতাসহ লাখ লাখ জনসাধারণ সম্পৃক্ত রয়েছে।   মৌসুমে শুরুতেই ধানের মূল্য বেশী থাকায় চাউল এর মূল্যও বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় সরকার চাউল আমদানীর উপর সকল ধরনের কর প্রত্যাহার করায় বাজার স্থিতিশীল হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এবং নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ব্যাপক বিদেশেী চাউল আমদানী হওয়ায় বর্তমানে শুল্কমুক্ত আমদানীকৃত চাউলে বাজার সয়লাব এবং দেশিয় শিল্প অর্থাৎ স্থানীয় চাউল কলগুলোতে উৎপাদিত চাউল বিক্রী করা সম্ভব হচ্ছে না ফলে শেরপুর জেলা সহ সারাদেশের চাউল কল ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে লোকসানের মুখে পতিত হচ্ছে। আমদানী ব্যবসায়ীরা বিনা শুল্কে চাউল আমদানী করছে কিন্তু চাউল কল মালিকগণকে প্রতিনিয়ত ব্যাংকের সুদ গুনতে হচ্ছে, আয়কর পরিশোধ করতে হচ্ছে ফলে অসম প্রতিযোগিতায় ও ক্রমাগত এই লোকসানের ফলে শেরপুর জেলা বেশীর ভাগ চাউল কলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে এর ফলে শুধুমাত্র চাউল কল মালিকগণই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বরং এই শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিকগণও কার্যতঃ বেকার হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।   বর্তমানে বিভিন্ন টি,ভি চ্যানেলে বার-বার খবর প্রকাশিত হচ্ছে যে, চাউলের বাজার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে শেরপুর জেলার চাউল-এর বাজার মূল্য মৌসুমের শুরুর তুলনায় বর্তমানে কেজি প্রতি ৮/১০ টাকা হারে কমেছে। যার দরুন চাউল কল মালিকদের ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে এবং চাউল কল শিল্প ভয়ংকর বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ব্যাংক সুদসহ ঋণ পরিশোধ করা দুরহ হয়ে পড়ছে।   এসময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা চাল কল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ হায়দর আলী, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব দুলাল উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক মোঃ শামীম হোসেন, চন্দন সাহা, এনামুল হক শেরপুরী প্রমুখ। জেলা শহরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
Share icon