শেরপুর বিএনপিকে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের নির্দেশ তারেক রহমানের

শেরপুর জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিকে স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ এবং তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের ভিত্তিতে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি দলকে শক্তিশালী করতে কীভাবে এগোতে হবে সে বিষয়ে পরিষ্কার বার্তা দেন।
বৈঠকে তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেন, “দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কোনো ধরনের চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি কিংবা ব্যক্তিস্বার্থে সংগঠন ব্যবহার মেনে নেওয়া হবে না। যেসব নেতা মাঠে সক্রিয়, ত্যাগী, জনগণের আস্থা রাখেন — তাদের দিয়েই গঠিত হতে হবে ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যন্ত সব ইউনিট।”
তিনি জেলা কমিটিকে সতর্ক করে বলেন, যারা দলে থেকে গোষ্ঠী রাজনীতি করেন বা বিভেদ সৃষ্টি করেন, তারা ভবিষ্যতে সংগঠনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেন। এদের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
বৈঠকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নারী নেত্রী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেন, “আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নিতে নির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। নারীদের রাজনীতিতে অধিকতর সক্রিয়, দৃশ্যমান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পর্যায়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি আন্তরিক। আমি সেই বার্তা মেনে মাঠে কাজ করব।”
দলীয় সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ পলাশ জানান, “তারেক রহমানের নির্দেশে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা দ্রুত ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্বশীল, পরীক্ষিত এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের দিয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন শুরু করব। কোনো তদবির বা পেছনের দরজা দিয়ে কমিটি হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু কাউন্সিল নয়— তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা জবাবদিহিমূলক সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করতে চাই।”
দীর্ঘদিন পর শেরপুর জেলা বিএনপিতে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর এটি ছিল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রথম সরাসরি ভার্চুয়াল বৈঠক। এতে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে ছিলেন জেলা আহ্বায়ক আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুর রহমান তারা, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, সফিকুল ইসলাম মাসুদ, সাইফুল ইসলাম, আবু রায়হান রুপম, কামরুল হাসান, ফাহিম চৌধুরী, সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল, আলহাজ্ব মো. হযরত আলী ও আওয়াল চৌধুরী।
আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “তারেক রহমান আমাদের পরিস্কার বলেছেন, এই কমিটির দায়িত্ব শুধু কিছু পদ বণ্টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের কাজ হবে দল পুনর্গঠন, নেতাকর্মীদের আস্থা ফেরানো এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যকর ভূমিকা রাখা।”
তারেক রহমানের এই ভার্চুয়াল বৈঠককে শেরপুর বিএনপির নেতারা তাদের সাংগঠনিক জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে মনে করছেন। নেতা-কর্মীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই নির্দেশনা কতটা বাস্তবায়িত হয় এবং বিএনপি জেলার রাজনীতিতে কতটা কার্যকর ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনে এগোতে পারে।