শেরপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
রবি, 30.12.2018 - 01:45 AM
Share icon
Image

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশের ন্যায় শেরপুরের তিনটি আসনেই ৩০ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ৮ ঘটিকা হইতে বিকাল ৪ ঘটিকা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। এই ভোটগ্রহণ উপলক্ষে শেরপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন।

শেরপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যেকোন উদ্ভট পরিস্থিতি মোকাবেলায় টহল জোরদার করা হয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।

যার কারণে ভোটারগণ উৎসাহ উদ্দিপনার মাধ্যমে ভোট প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

শেরপুরের তিনটি আসনের মধ্যে দুইটি আসনেই আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

এর মধ্যে শেরপুর-১ আসনে পরপর চারবারের নির্বাচিত এমপি ও জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিউর রহমান আতিক এবং শেরপুর-২ আসন থেকে চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সফল কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। এছাড়াও শেরপুর-৩ আসন থেকে পরপর দুইবারের নির্বাচিত এমপি ইঞ্জিনিয়ার ফজলুল হক চাঁন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন।

অর্থাৎ শেরপুরের তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হন। এই তিনটি আসনেই সরকার দলীয় এমপি নির্বাচিত হওয়ায় এলাকার ব্রীজ, কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট, বিভিন্ন অবকাঠামোসহ ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে শেরপুরে তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে দলীয় নেতাকর্মী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ আলোচনা করে জানা যায় গত দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার দৃশ্যমান যেসব উন্নয়ন মূলক কাজ করেছেন, তাতে এদেশের সাধারন জনগনতো বটেই, বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছে এই আওয়ামী লীগ সরকার। তাই এবারও এই তিনটি আসন থেকে তারা উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে আওয়ামী লীগকেই ভোট প্রদান করবেন।

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েক জন নেতাকর্মীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, সাধারন ভোটাররা শান্তি চায়, তারা জ্বালাও-পোড়াও, হামলা-মামলা পছন্দ করেন না। তাই দেশ ও দশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর শান্তিকামী ভোটাররা আবারো নৌকা মার্কায় সমর্থন দিয়ে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে দেশ পরিচালনার ক্ষমতা তুলে দিবেন বলে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

শেরপুরের তিনটি আসনে বিএনপি প্রার্থী থাকলেও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আছে আওয়ামী লীগ।

শেরপুর-১ আসন থেকে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী ডাঃ সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা নির্বাচনী মাঠে নামলেও ভোটারদের মাঝে তিনি খুব একটা পরিচিত নন। এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী ছিলেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী। কিন্তু ঋণখেলাপীর কারণে তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এবার দেশের সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হযরত কন্যা ডা. সানসিলা জেবরিনকে নিয়ে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে বিএনপি। 

শেরপুর-২ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ আলহাজ্ব জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে ফাহিম চৌধুরী নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। অন্যদিকে শেরপুর-৩ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল। 

এদিকে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। শুক্রবার সন্ধ্যায় শেরপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে স্থানীয় সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক (উপ-সচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলাম।

প্রেস কনফারেন্সে তিনি জানান, শেরপুরের ৩টি সংসদীয় আসনে ইতোমধ্যে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সকল সরঞ্জাম সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠ করতে জেলা পুলিশের ৫২ টি মোবাইল টিম জেলার ৫২ টি ইউনিয়নে কাজ করবে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে আনসার ও পুলিশের ১৪ জন সদস্য আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবে। প্রতিটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর ২টি করে পেট্রোল টিম, পুরো জেলায় বিজিবির ৬টি টিম এবং র‌্যাবের ৬টি টিম কাজ করবে।

জেলার ৩৯৯ টি কেন্দ্রে ১৭জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ৬ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের মোট ২৩ টি মোবাইল কোর্ট টিম কাজ করবে। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার তথ্য মতে, জেলায় ২৮৫টি গুরুত্বপূর্ণ ও ১১৪টি সাধারণ ভোট কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে।

নির্বাচন চলাকালীন সময়ে জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলায় সেনাবাহিনীর ৪৫০জন সদস্য, বিজিবির ১২৬জন সদস্য, র‌্যাবের ৫০ জনেরও বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

 

Share icon