নালিতাবাড়ীতে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে স্থগিত হয়ে গেল প্রানী সম্পদ খামারীদের প্রনোদনার অর্থ
নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি : জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দের দ্বন্দ্ব ও হস্তক্ষেপের কারনে স্থগিত হয়ে গেল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রাণি সম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের খামারী ও উপকারভোগীদের প্রনোদনার অর্থ। দ্বিতীয় ধাপের ৯৭০ জন উপকারভোগি এই প্রকল্পের টাকা না পাওয়ায় তাঁদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। খামারীদের প্রনোদনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ২৩ জুন মঙ্গলবার দুপুরে বিস্তারিত বর্ননা করেছেন উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক ও সরকারের যৌথ অর্থায়নে ‘দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ নামের প্রকল্পটি নেওয়া হয়। উপজেলায় এই প্রকল্পের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কে সভাপতি করে একটি কমিটি রয়েছে। প্রকল্পের জন্য প্রকল্প সম্প্রসারন কর্মকর্তা, দশজন মাঠকর্মী, দুইজন সুপারভাইজার সহ ৪০ জন জনবল দিয়ে প্রকল্পের প্রথম ধাপে ইন্টারনেট মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে গাভী পালন, ব্রয়লার, সোনালী, লেয়ার ও হাঁস পালন এর উপড় নালিতাবাড়ীতে ১৭৩০ জন খামারি প্রকার ভেদে ৪ হাজার ৫শ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ২২ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত প্রণোদনা দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় ধাপে মাঠকর্মীগন জেলা হতে তালিকা ও ষ্ট্রে লিষ্ট অনুযায়ী ৯৭০ জন প্রকার ভেদে প্রণোদনার টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উপজেলা কমিটি সর্বশেষ প্রকল্প কমিটির সদস্যের বাইরে গিয়ে গত ১৯ মে জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ১২ জন চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রকে ৩৫ জন করে মোট ৪৫৫ জনের তালিকা জমা দিতে বলেন। কিন্তু জন প্রতিনিধিগণ ৯৭০ জনের তালিকা নিজেরা করতে চান বলে সাফ জানিয়ে দেন। কিন্তু উপজেলা কমিটি এতে রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ এনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জনপ্রতিনিধিগন অভিযোগ করেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার (২১ জুন) ঢাকা খামারবাড়ী সম্প্রসারণ প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা: দেবাশীষ দাস এর নের্তৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি নালিতাবাড়ীতে এসে তদন্ত করে। তদন্তে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাদা করে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা, উপকার ভোগীসহ নানাজন কে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং দ্বিতীয় ধাপের টাকা স্থগিত করা হয়েছে বলে সাংবাদিকেদের জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি মো.আবদুস সবুর সাংবদিকদের বলেন, প্রথম ধাপে ১৭৩০ জনকে প্রণোদনা দেওয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। তাই আমরা দ্বিতীয় ধাপের তালিকাটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ করতে চেয়েছিলাম।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডা: মতিউর রহমান বলেন, তালিকায় কোন প্রকার অনিয়ম হয়নি। কমিটির উদ্দেশ্য ছিল, জনপ্রতিনিধিদের সাথে জনগনের সর্ম্পক বিদায় তা সমন্বয় করে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করা। কিন্তু রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বন্দ্বের কারণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ৯৭০ জন খামারি উপকারভোগীদের প্রণোদনার অর্থ স্থগিত করে দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি হেলেনা পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, মাঠকর্মীদের তালিকায় চেয়ারম্যানদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিলো। কিন্তু চেয়ারম্যানগণ তা মানেনি।