শেরপুরে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ: আহত-৬
শেরপুরে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের ঘিনাপাড়ামধ্যপাড়া গ্রামে জমিজমা নিয়ে দুই পক্ষের সংষর্ষে ৬ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ৩ জনকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও একজনকে জামালপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ১১ মার্চ সকাল ১১ টা দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ শেরপুর সদর থানায় আলাদা আলাদা অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ঘটনার মূলহোতা হিসেবে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত এক ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে দায়ি করেছেন এলাকাবাসী। সরকারি চাকুরির সুবাদে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে সখ্যতা ও টাকার জোরে তার ভাই-ভাতিজার সাথে বার বার নির্যাতন করে আসছেন বলে দাবি ভোক্তভোগী পরিবারটির। এছাড়াও ওই এলাকার কাউকে তিনি মানুষ মনে করেন না এটা এলাকাবাসীর অভিযোগ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রকৃত অপরাধী নির্ণয়ে চলছে তদন্তকাজ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, লছমনপুরের ঘিনাপাড়া মধ্যপাড়া গ্রামে মো. আজিজুল ইসলামের সঙ্গে তার ভাই মো. কফিল উদ্দিনের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধপূর্ণ ওই জমি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার আপোষ মিমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে। আজিজুল ইসলাম একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি বেশি প্রভাব বিস্তার করেন ও ক্ষমতা প্রয়োগ করেন বিধায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে আপোষ করা সম্ভব হয়নি। এর জের ধরে ১১মার্চ তার ছেলেদের সাথে নিয়ে তার ভাই ও ভাতিজার উপর দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে তিন জন আহত হন। প্রতিরোধ করতে গিয়ে উভয়
পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটে। ফলে দুই পক্ষের মোট ৬ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ২ জন প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন এবং অপর ৪জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এ ঘটনায় বাদী আ: লতিফ লিটন বলেন, পূর্ব হইতে জমিজমার বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আমাদের বিরোধ চলছিলো। তারা সরকারি সরকারি চাকরি করে ও এলাকার ক্ষমতাবান মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে সাহস পায়না। তারা
হুমকি দিয়ে বলে, আমাদের বিচার করার লোক দেশে নাই। তারা তাদের বসতবাড়ির নিকট আমাদের একটি লেবুর বাগানে মাদক সেবন ও জুয়ার আসর বসায়। এই বিষয়ে তাদের একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তারা উল্টা ধারালো রামদা, লাঠি,
লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে আমাদের গালাগাল শুরু করে। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় মো. মাহবুব আলম (৩২), মো. মিজানুর রহমান (৩৫), মোছা. কণিকা আক্তার (২৫) ও মোছা. রুজিয়া বেগম (৪০) গুরুতর আহত হয়। তাদের দুইজন হাসপাতালে ভর্তি আছে। এই ঘটনায় ৫ জনকে নামীয় এবং ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত করে শেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
লতিফের ভাই আহত মিজানুর রহমান বলেন, তারা একাধিকবার আমাদের বাড়িতে হামলা করেছে। এর আগে মাননীয় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭/১১৭ (সি) ধারায় আবেদনও করেছি। কিন্তু তারা আইন আদালতও মানছেনা। তারা আমাদের জীবননাশের হুমকি দিয়েই আসছে। বর্তমানে আজিজুর রহমানের ক্ষমতার দাপট ও হুমকিতে আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমরা প্রধান মন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, তাদের কে আমরা আঘাত করিনি। তাদের কে বা কারা মেরেছে এটা আল্লাহ ভালো জানেন।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষেরই তিন জন করে ৬জন আহত হয়েছে। উভয় পক্ষের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।