শেরপুরে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ
প্রথমে এক বছরের প্রেমের সম্পর্ক, তারপর বিয়ের প্রলোভনে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ, অতঃপর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিতে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কলেজ ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের নকলা উপজেলার জালালপুর এলাকায়।
এই ঘটনায় বুধবার ১০ মে ভিকটিমের মা মোছাঃ স্বর্ণা বেগম (৪২) বাদি হয়ে ধর্ষক মোঃ মোশারফ হোসেন মিসকিন (২০) ও তার পিতা মোঃ আব্দুল লতিফসহ দুইজনের বিরুদ্ধে নকলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রতারক প্রেমিকের লালসার শিকার ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা ওই কলেজ ছাত্রী এখন শেরপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা যায়, ধর্ষণের প্রমাণ লোপাট করতে সুকৌশলে টেবলেট খাইয়ে ওই কলেজ ছাত্রীর গর্ভের ভ্রূণ নষ্টের চেষ্টা করে ধর্ষক মোশারফ হোসেন। এতে ভিকটিমের রক্তক্ষরণ শুরু হলে প্রথমে তাকে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার ৯ মে রাতে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে রাত ৯ টার দিকে ওই কলেজ ছাত্রীকে হাসপাতালে দেখতে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বছির আহমেদ বাদল।
এ বিষয়ে এএসপি মো. সাইদুর রহমান বলেন, ভিকটিমকে আইনগত সকল সহয়তা দিতে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত মোঃ আব্দুল লতিফের ছেলে মোঃ মোশারফ হোসেন মিসকিন (২০)নকলা থানার বাসিন্দা। অপরদিকে ভিকটিম একই উপজেলার বানেশ্বরদী গ্রামের বাসিন্দা এবং নকলা সবুরন নেছা মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিমের সাথে আসামীর প্রায় এক বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভনে ফুঁসলিয়ে ওই ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে মোশারফ হোসেন। পরে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ক্লিপ ইন্টরনেটে ছাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসামী ভিকটিমকে ব্লাকমেইল করে তার বাড়ীতে নিয়ে ১০ এপ্রিল ২০২৩ থেকে ০৬ মে ২০১৩ খ্রি. পর্যন্ত ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিম অন্তস্বত্বা হয়ে পড়ে। আসামী সুকৌশলে সেই গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট করতে ভিকটিমকে গর্ভপাতের টেবলেট খাইয়ে দিলে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ভিকটিমের মা মেয়ের কাছে ঘটনা জানতে পেরে আসামীর বাবা- মা'র সাথ যোগাযোগ করেন। কিন্তু তারা ইউপি সদস্য লাল মিয়ার মাধ্যমে বাদী স্বাক্ষীদেরকে মারপিট করে অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
এবিষয়ে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, ভিকটিমের মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অপরাধে দুইজনকে আসামি করে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।