আদিবাসী মায়েদের ব্যাতিক্রমি দৌড় প্রতিযোগিতা
হাজার বছর ধরে শেরপুরের গারো পাহাড় ও সমতলে বংশ পরম্পরায় গারো, কোচ, হাজং, বর্মন, ডালু ও বানাই আদিবাসীরা বসবাস করে আসছে। এদের বেশির ভাগই মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় জীবন-যাপন করে আসছে।
এসব আদিবাসী মায়েরা তাদের সন্তান জন্মের পর থেকেই বিশেষ কায়দায় কাপড়ে বেঁধে পিঠে করে সংসার ও মাঠ-ঘাটের সকল কাজ করে অভ্যস্থ। তবে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে চিরচারিত নিয়মে সেই মায়েদের পিঠে সন্তানকে নিয়ে ব্যাতিক্রমি দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান হয়ে গেলো শেরপুরে। এসময় মায়েরা তাদের সন্তানদের নিয়ে অনেক নিরাপদেই দৌড় প্রতিযোগিতা শেষ করে।
৯ আগষ্ঠ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে এ ব্যাতিক্রমি প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকার সীমান্ত গ্রাম রংটিয়ায়।
নাগরিক প্লাটফর্ম "জন উদ্যোগ" এর আয়োজনে এবং স্থানীয় বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের সহযোগিতায় রাংটিয়া আদর্শ গ্রাম মাঠে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠানমালা।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীবর্দী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসডি শহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে দুই জন আদিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং আদিবাসী ১১ মেধাবী শিক্ষার্থীকে সম্মাননা ও উপহার সামগ্রী বিতরণ, আদিবাসী কোচ ও হাজং সম্প্রদায়ের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রীতি ফুটবল ম্যাচের পাশাপাশি আদিবাসী মায়েদের পিঠে শিশুদের নিয়ে এ ব্যাতিক্রম দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী মায়েরা জানায়, আমাদের প্রথাগত ও চিরচায়িত অভ্যাস শিশুদের পিঠ বেঁধে সংসার ও মাঠের সকল কাজ করা। তাই এই দৌড় প্রতিযোগিতায় আমাদের কোন ভয় বা সমস্যা হয়নি।
এদিকে আদিবাসী কোচ নেতা যুগল কোচ জানায়, আমাদের কৃষ্টি ও কালচারকে ধরে রাখতে এ ব্যাতিক্রম আয়োজন। এতে আদিবাসী মায়েদের কঠোর পরিশ্রমের চিত্র ফুটে উঠেছে।
আয়োজক জন উদ্যোগ এর আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ জানা, নানা সুবিধা বঞ্চিত আদিবাসীদের উজ্জিবিত রাখতে এবং মাতৃতান্ত্রিক সমাজের আদিবাসী নারীরা কতটা পরিশ্রমি তা সমাজকে বোঝাতে এ ব্যাতিক্রতি আয়োজন।
এদিকে আদিবাসী দিবসের এসব অনুষ্ঠানমালা দেখতে পাহাড়ি আদিবাসী নারী-পুরুষের পাশাপাশি স্থানীয় বাঙালিরা ভির করে।