প্রযুক্তি হসপিটালে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ: সার্ভারে মিলেছে লেনদেনের তথ্য, কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা

স্টাফ রিপোর্টার
রবি, 27.07.2025 - 06:39 PM
Share icon
Image

শেরপুর পৌর শহরের নারায়ণপুর এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি 'প্রযুক্তি হসপিটাল'-এ নির্ধারিত ফি’র তুলনায় কিছু পরীক্ষায় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী, স্বজন ও সচেতন মহলের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সেবার মান ও মূল্য নির্ধারণে স্বচ্ছতা এবং নজরদারির দাবি করছেন অনেকে।

এ প্রতিনিধির অনুসন্ধানে হাসপাতালের বিলিং কম্পিউটার সার্ভারে সংরক্ষিত তথ্য ঘেঁটে বিভিন্ন পরীক্ষায় একাধিক রসিদে ভিন্ন ফি আদায়ের তথ্য পাওয়া গেছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, নির্ধারিত ফি’র তুলনায় কোথাও কোথাও বেশি অর্থ নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শেরপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘনের যেকোনো অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রযুক্তি হাসপাতালের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত শুরু করবো।”

পরিবেশ অধিদপ্তর, শেরপুর-এর পরিদর্শক সুশীল কুমার দাস বলেন, “বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনায় পরিবেশ ছাড়পত্র ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাধ্যতামূলক। বিষয়টি নজরে রয়েছে, প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শেরপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির এক সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, “আমাদের সংগঠন ফি’র সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়ম মানছে না। বিষয়টি নজরদারির মধ্যে আনলে সমাধান সম্ভব।”

ভুক্তভোগী আকলিমা বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, “একই আল্ট্রাসাউন্ড পাশের একটি ক্লিনিকে ৬০০ টাকায় হলেও এখানে ১২০০ টাকা রাখা হয়েছে। জিজ্ঞেস করলে বলে, ‘আমাদের সিস্টেম আলাদা।’ সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বোঝা কঠিন।”

আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, “বাইরে মূল্য তালিকা থাকলেও সঠিকভাবে তা অনুসরণ করা হয় না। কখনো কখনো বাড়তি টাকা না দিলে কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলতে বিলম্ব হয়, যা দুশ্চিন্তার বিষয়।”

অভিযোগের বিষয়ে 'প্রযুক্তি হসপিটাল' এর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বিস্তারিত মন্তব্য এড়িয়ে যান এবং সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন-এর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, শুধুমাত্র প্রযুক্তি হসপিটাল নয়, জেলার অন্যান্য বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। যথাযথ তদন্ত, নিয়মিত তদারকি ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা কার্যকর হলেই জনস্বাস্থ্য সেবায় আস্থা ফিরবে।

Share icon