ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জনসভা মঞ্চে শেখ হাসিনা
সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
বৃহস্পতি, 08.03.2018 - 01:55 AM
সময় ডেস্ক।। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে ইউনেসকোর স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টি উদযাপন করতে বুধবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ জনসভায় লাখো জনতার সমাগম ঘটে। বুধবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দলের আয়োজিত জনসভায় বেলা ৩টায় পৌঁছান তিনি।
এ সময় ডায়াস থেকে শেখ হাসিনার আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম স্লোগান দেওয়া হয়। পরে তিনি সভাপতির আসন অলংকৃত করেন।
কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। স্বাধীন বাংলাদেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কোনো সমাবেশে মানুষের এমন ঢল দেখা যায়নি বলে দাবি করেছেন অনেকেই।
বুধবার সমাবেশে আসা কমপক্ষে ৫০ জনের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাদের অধিকাংশরই বয়স ৫০ বছরের ওপরে। তারা দাবি করেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বুধবারের আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মানুষের সর্বোচ্চ ঢল নামে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ।
সেদিন শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে রাজাকার আলবদরদের বিচারের দাবিতে 'ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির' আয়োজনে বসে জনতার আদালত। আদালতের রায় শুনতে সমাগম ঘটে লাখো জনতার।
এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আরও অনেক সমাবেশ হয়েছে। কিন্তু ১৯৯২ সালের জনতার সেই ঢল আর দেখা যায়নি। প্রায় দেড় যুগ পর বুধবার আবার দেখা মিললো জনতার সেই ঢল।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে জনসমাগম ঘটতে থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
সমাবেশে লোকজনের আসার সুবিধার্থে বেলা ১১টা থেকে শাহবাগের রূপসী বাংলা সিগন্যাল, কাঁটাবন মার্কেট মোড়, নীলক্ষেত, চানখাঁরপুল, জিপিও ও মৎস্যভবন মোড় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
দুপুর ২টায় জনসভা শুরুর আগেই লাখো মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। অনেকের দাবি, ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ জনতার যে ঢল নামে, বুধবারের ঢল ছিল তার থেকেও বেশি।
যাত্রাবাড়ী থেকে সমাবেশে আসা মো. লিটন বলেন, আমি ১৯৯২ সালে জনতার আদালতে এসেছিলাম। সেদিনও লাখো জনতার উপস্থিতি ছিল। তবে আমার ধারণা আজ সেদিনের থেকেও বেশি মানুষের সমাগম ঘটেছে। আমার জীবনে কোনো সমাবেশে এত মানুষের উপস্থিতি দেখিনি।
মিরপুর থেকে আসা মো. জামাল শেখ বলেন, জীবনে অনেক সমাবেশ দেখেছি। কিন্তু মানুষের এমন স্রোত আগে কখনো দেখিনি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কোথাও তিলধারণের জায়গা ছিল না।
১৯৯২ সালের জনতার আদালতে আসে জামিল উদ্দিন নামের আরও একজন বলেন, আজ (বুধবার) হয়তো ১৯৯২ সলের থেকে বেশি মানুষের সমাগম ঘটেছে, তারপরও আমি ১৯৯২ সালের জনসমাগমকেই এগিয়ে রাখবো। কারণ ১৯৯২ সালের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। সে সময় নানা বাঁধা উপেক্ষা করে জনগণ ছুটে এসেছিল। কিন্তু আজকে আসতে কোনো বাঁধার মুখেই পড়তে হয়নি।
ইমরান হোসেন নামের এক যুবক বলেন, সোহারওয়ার্দী উদ্যানে অনেক রাজনৈতিক সমাবেশ দেখেছি। কোনো সমাবেশেই এত মানুষের সমাগম দেখিনি। পানির স্রোতের মতো মানুষ এসেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেন বলেন, ১৯৯২ সলের জনতার আদালতের কথা শুনেছি। নিজ চোখে দেখা হয়নি। আজ অনেকের মুখেই শুনলাম ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চও নাকি আজকের মতো মানুষের ঢল নেমেছিল।
এই শিক্ষার্থী বলেন, সমাবেশে এত মানুষ হবে আমার ধারণায় ছিল না। কী পরিমাণ মানুষের সমাগম হয়েছিল তা বর্ণনা করা কঠিন। নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাসই হতো না কোনো সভায় এত মানুষ উপস্থিত হয়।