করোনায় নতুন উদ্বেগ বাড়াল চীনা ২ রোগী

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
শুক্র, 14.08.2020 - 07:43 PM
Share icon
Image

চীনে প্রায় ছয় মাস আগে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ওঠা দুই রোগী আবারও সংক্রমিত হয়েছেন। পূর্বে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের শরীরে এই ‘ভাইরাসটির দীর্ঘায়িত হওয়া এবং পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সক্ষমতায়’ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

চীনের মধ্যাঞ্চলের হুবেই প্রদেশের ৬৮ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে গত রোববার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে হুবেই প্রদেশের উহানে যখন করোনার প্রথম প্রাদুর্ভাব শুরু হয় তখন ওই নারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এর প্রায় ছয় মাস পর আবারও তার শরীরে ভাইরাসটি ফিরে এসেছে।

এছাড়া গত এপ্রিলে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন সাংহাইয়ের এক ব্যক্তি। সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর গত সোমবার তার শরীরেও করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কিন্তু এই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার কোনও উপসর্গই দেখা দেয়নি।

এই দুই রোগীর ঘনিষ্ট সংস্পর্শে আসা কারও করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়নি। তারপরও তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ভাইরাল সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের পুনরায় করোনায় আক্রান্তের এই ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। বিশ্বজুড়ে অনেকের দেহেই দীর্ঘসময় পর ভাইরাসটি পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে এই ভাইরাসটির উৎপত্তি হয়। দীর্ঘ ৮ মাসে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দুই কোটিরও বেশি মানুষ; প্রাণহানি ছাড়িয়েছে সাড়ে সাত লাখ।

সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীরা পুনরায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল হলেও কিছু রোগী কেন দীর্ঘমেয়াদী উপসর্গে ভুগছেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এছাড়া এই রোগটির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ইমিউনিটি পুনরায় সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষায় কতদিন পর্যন্ত ভূমিকা রাখতে পারে সেটিও পরিষ্কার নয়।

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের সুরক্ষামূলক অ্যান্টিবডির মাত্রা কয়েক মাস পর দ্রুত কমে যায়। যে কারণে একবার আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠার পর পুনরায় ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হচ্ছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে এই মহামারিতে পুনঃসংক্রমিত হওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত খুব সামান্যই তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে।

তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, অ্যান্টিবডি বিলীন হয়ে যাওয়ার পর শরীরের অন্যান্য সেল এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকরা বলেছেন, কয়েক মাস পর যখন কোনও রোগীর শরীরে আবারও ভাইরাস শনাক্ত হয়, তখন সেটি ওই ব্যক্তির শরীরে থেকে যাওয়া ভাইরাসের মৃত কণা হতে পারে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ।

 

Share icon