শেরপুরে ফের পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেলো বাঁধ ও ঘরবাড়ি

স্টাফ রিপোর্টার
শুক্র, 17.06.2022 - 06:22 PM
Share icon
Image

মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় পাহাড়ি ঢলের তোড়ে চোখের নিমিষেই ভেসে গেলে বাঁধ ও বাঁধের সাথে ঘরবাড়ি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারি বর্ষন ও উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে দ্বিতীয় দফায় শেরপুর জেলার সীমান্ত্মবর্তী ঝিনাইগাতি উপজেলার মহারশী ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন অফিস, বাজার এলাকা এবং বিভিন্ন গ্রাম পস্নাবিত হয়েছে। 

উপজেলার মহারশী এবং সোমেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর, ধানাশাইল, গৌরীপুর, হাতিবান্দা ও মালিঝিকান্দাসহ ৫ ইউনিয়নের ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হয়েছে। এসব এলাকার রামেরকুড়া, দিঘীর পাড়, চতল এর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপজেলা সদর এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে উলেস্নখিত গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। 

পানির চাপে ১৭ জুন শুক্রবার সকালে রামেরকূড়া গ্রামের বাঁধের সাথে একটি বাড়ি ও পলট্রি খামার ভেসে গেছে। সেই সাথে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগ উদ্ধার করে। প্রবল পানির স্রোতে অনেককেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে শুকনো স্থানে আসতে পারছে না বলে স্থানীয়রা জানায়। 

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঝড়ো হাওয়া ও ভারি বর্ষনের কারণে উপজেলার সর্বত্র বিদু্যত সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে মোবাইল নেটওয়ার্কও সমস্যা হচ্ছে। যাদের মোবাইল চার্জ দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা নেই তারা সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।

এদিকে উজানের ভারতের মেঘালয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরম্ন করেছে। ইতিমধ্যে পস্নাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফায় আজ সকাল থেকে উপজেলা সদরে ও বিভিন্ন গ্রামে পানি আসতে শুরম্ন করেছে। বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।

ইতিমধ্যে প্রথম দফায় বন্যার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের বরাদ্দের ১৫ মেট্রিক টন চালের মধ্যে ইতিমধ্যে ১০ মেট্রিক টন বিতরণ করা হয়েছে বাকী চাল বিতরণ করা হবে। এছাড়া বর্তমানে যারা পানি বন্দি হয়ে রয়েছে তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

গত ১০ জানুয়ারী সকালে ঝিনাইগাতি, শ্রীবর্দী ও নালিতাবাড়ি উপজেলার সুমেশ্বরি, মহারশি, ভোগাই, চেলস্নাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪০ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পরে। গত ৭ দিনে ওইসব এলাকার পানি সবেমাত্র নামতে শুরম্ন করলেও শুক্রবার সকাল থেকে আবারও ঝিনাইগাতি উপজেলার মাহারশি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন করে ২০ গ্রাম পস্নাবিত হলো।

পানিউন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানায়, নালিতাবাড়ি ভোগাই নদী পয়েন্টে ১১৫ মিলিমিটার এবং শেরপুর সদর পয়েন্টে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তের পাহাড়ি নদীর সবগুলোতেই বিপদ সীমানার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বৃহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুর-শেরপুর পয়েন্টে এখনও বিপদ সীমানার প্রায় ৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

Share icon