শেরপুরে ধলা ইউ'পি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা, মানববন্ধন, পাল্টাপাল্টি অবস্থান
শেরপুর সদর উপজেলার ধলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ৯ সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনে মানববন্ধন করেছে। এসময় তাদের সাথে শতাধিক সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করে অপরদিকে চেয়ারম্যানের পক্ষে প্রায় ২শতাধিক জনগণ ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থান নেয়। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের এই কোন্দলকে কেন্দ্র করে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে ধলা ইউনিয়নের চান্দের নগর করইতলা বাজারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান নাগরিক সেবায় হয়রানী, প্রকল্পে অনিয়ম, বিভিন্ন লাইসেন্স প্রদানের বাড়তি ফি গ্রহন, অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে জন্মনিবন্ধন প্রদান ও রাজস্ব আয় হতে সদস্যদের বেতন-ভাতা প্রদান না করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করছে।
এঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নিটু মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান পাস করার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোন মিটিং করে নাই। ট্যাক্সসহ সকল প্রকার রাজস্ব আদায়ের হিসাব দেয় না, বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতি স্বাক্ষর জাল করে টাকা আত্মসাৎ করেছে, এছাড়া চেয়ারম্যান দিনের বেলা অফিস করেনা সে রাতে অফিস করে, যার জন্য সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে থাকে।
ঘটনা অনুসন্ধানে জানাজায়, গত ১৩ জুলাই ২০২২ তারিখে ধলা ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর নানান অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। সেই অনাস্থা প্রস্তাবটি নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জন্য করা হয়েছিল উল্লেখ করে ২৬ জুলাই ২০২২ তারিখে শেরপুর জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহারের সেই আবেদনে সকল ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যরা উল্লেখ করেন, জাকির হোসেন চেয়ারম্যান তার নির্বাচনের পর থেকে অদ্যবধি সঠিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন। তবে কিছু নেতাকর্মী ও কুচক্রী মহলের বুদ্ধিতে এবং নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির এক পর্যায়ে সম্পর্কের অবনীত হওয়ার পর তারা এই প্রস্তাব আনে। তবে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখে ৯ জন সদস্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পুরনো সেই অভিযোগ তুলে পুনরায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে।
এব্যাপারে চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, আমি নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটে জয়ী হয়েছি। আমি জনপ্রিয় এবং সৎ মানুষ বিদায় আমাকে মানুষ ভোট দিয়ে জয়ী করেছে। জনগণের ভালোমন্দ দেখার পবিত্র দায়িত্ব আমার। কিন্তু মেম্বারদের অনৈতিক প্রস্তাব মেনে নেওয়া আমার কাছে সম্ভব নয়।
তারা প্রত্যেকটা নাগরিক সুবিধা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতে চায় এবং সেই টাকার ভাগ আমাকে দেয়ার প্রস্তাব করেছে। তারা আমার কাছে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এছাড়াও পরাজিত শক্তি নির্বাচনে হেরে এদেরকে ব্যবহার করে এ কাজগুলো করাচ্ছে। যেন আমি সুস্থভাবে পরিষদ পরিচালনা করতে না পারি।
এ ঘটনায় সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহনাজ ফেরদৌস বলেন, আমি ঘটনাটা অবগত হয়েছি। এ ব্যাপারে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।