‘প্রজন্ম-৭১’ সভাপতি আজিজের কান্ড !
নিজস্ব সংবাদদাতা॥ শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া বানিয়াপাড়া গ্রামে জমিজমা নিয়ে ধীর্ঘদিন ধরেই ভাই-বোনের বিবাদ চলছে। প্রজন্ম-৭১’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ তার বড় বোন আজিরন নেছা ও বোন জামাই আবুল হাসেমেকে বেধড়ক পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
এরই জের ধরে বড় বোন আজিরন নেছা এবং বোন জামাই আবুল হাসেমকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় প্রজন্ম-৭১’র সভাপতি এবং একাত্তরের যুদ্ধে গণশহীদ আইজ উদ্দিনের বড় ছেলে আজিজুর রহমান আজিজ ও আরেক বোন হাসিনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে।
আহত বোন ও বোন জামাই এখন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ঘটনায় আজিজুর রহমান ও অপর বোন হাসিনাকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এই মামলায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রজন্ম-৭১’র ওই নেতার বাড়ী সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া বানিয়াপাড়া গ্রামে।
বোন ও বোন জামাই এর দাবী আজিজ দীর্ঘদিন থেকে তাদের ক্রয়কৃত ও পৈত্রিক জমি জবর দখল করে আছেন। জমি দখলে রাখতে কৌশল করে বিতর্কিত ও বিরোধ জমিতে আজিজ একটি মাদরাসা এবং একটি ছোট্র মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছেন।
জমি চাইলেই জামায়াত-শিবিরের সমর্থক আখ্যা দিয়ে কাছেই ঘেষতে দেয় না।জমি চাওয়ায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে আজিজের বোন ও বোন জামাইকে ক্রয়কৃত বসতভিটা থেকে পিটিয়ে বের করে দেয়। ওই ঘটনায় পরদিন সদর থানায় মামলা করেন তার বোন আজিরন নেছা।
চিকিৎসাধীন থাকা আজিরন নেছা হাউমাও করে কেঁদে কেঁদে অভিযোগ করেন, আমিও ৭১ এর শহীদের সন্তান। আমার স্বামীর ক্রয়কৃত জমি ও পৈত্রিক জমি আজিজ বেদখল দিয়েছে।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রজন্ম-৭১’র সভাপতি আজিজুর রহমান পাশ কাটিয়ে বলেন তারা জামায়াত-শিবিরের লোক। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে আমার আশেপাশে জামায়াত-শিবিরের লোক থাকতে দেব না।
সরজমিনে জানা গেছে অভিযুক্ত আজিজ প্রজন্ম-৭১’র ওই পরিচিতি ব্যবহার করে শুধু আপনজন নয়, এলাকার মানুষের সাথে নানা ভাবে প্রতারনা করে আাসছে। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও চাকুরি দেওয়ার নামে অসংখ্য মানুষের কাছে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আজিজের বিরুদ্ধে।
প্রজন্ম-৭১’র পরিচিতি ব্যবহার করে নানা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন সরকারি সুবিধা ও অসংখ্য মানুষের সম্পদ এমন অভিযোগ এলাকার স্থানীয় আওয়ামলীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের।
হাসেম জামাতের লোক এমনটি স্থানীয় কেউ জানেনা। অপর অভিযুক্ত হাসিনা ইয়াসমিনের স্বামী ও আজিজের ভগ্নিভতি শওকত হোসেন আকন্দ বলেছেন জমির লোভে হাসেমের বিরুদ্ধে জামাতের তকমা লাগানো হয়েছে। স্থানীয় মেম্বার ছানিউর রহমান চাইনিজ বলেছেন হাসেম নিরীহ ভদ্রলোক।
স্থানীয় চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া বলেছেন, আজিরন নেছা ও তার স্বামী কখনও জামাত করেন বলে শুনিনি। জামাত শিবির প্রচার করে বোনের ক্রয়কৃত জমি ও পৌত্রিক প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার কৌশল মাত্র।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মারপিটের ঘটনায় প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে থানায় নিয়মিত মামলা নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
স্থানীয় এমপি ও হুইপ আতিউর রহমান আতিকের বাড়ী একই এলাকায়। এ ব্যাপারে হুইপ আতিক বলেছেন, আজিজের বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযোগের অন্ত নেই। আজিজ প্রজন্ম-৭১’র সভাপতি পরিচিতি ব্যবহার করে এলাকায় অনেক অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ব্যাবস্থা গ্রহন করতে পুলিশকে বলা হয়েছে।