মিশ্র ফলবাগান করে তাক লাগালো শেরপুরের দুই বন্ধু
শেরপুরে ২৫ একর জায়গা লিজ নিয়ে মিশ্র ফল বাগান করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন দুই বন্ধু। প্রবাসী বোনের অনুপ্রেরণা ও আর্থিক সহযোগিতায় দুই বন্ধু চাকরি ও ব্যবসার ফাঁকে তিনি চিন্তা করেন নিজের এলাকায় কিছু করার জন্য। পরে ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে শুরু করেন মিশ্র ফল বাগান। তারা ২০২০ সালে মাল্টা, পেয়ারা, লেবু, সৌদি খেজুর, বিভিন্ন জাতের কুল, আপেল, কমলা, আঙ্গুর, ড্রাগন, বারোমাসি আম, লিচু, লটকন, পেঁপে সহ শতাধিক প্রজাতির ফলের চাষ করছেন। তার মধ্যে এক বছরের মাথায় থাই পেয়ারা, পেঁপে আর আপেল কুলসহ বেশ কয়েক প্রকার ফল বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপেই ফল বিক্রিতেই তারা এখন স্বাবলম্বী। এমনি দুই আত্নপ্রত্যয়ী যুবক হলেন, সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের সূর্যদী গ্রামের ব্যবসায়ী এমদাদুল হক বিদ্যুৎ ও পূবালী ব্যাংকে চাকরিজীবী উদয় কুমার। তাদের এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যরাও মিশ্র ফলের বাগান করার আগ্রহী হয়ে উঠছে।
বাগানের মালিক এমদাদুল হক বলেন, আমরা আমাদের প্রবাসী বোনের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে বাগান করেছি। প্রথম বছরেই আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া শুরু করেছি। আমাদের ফলের বাগানের বয়স এক বছর হলেও আমরা বাগান থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আমাদের বাগানের ফল গাছে কোন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করা হয়ন এবং ফল বিক্রির সময় ব্যবহার করা হয়না কোন ফরমালিন। তাই সাধারন ক্রেতাদের কাছে এসব ফলের চাহিদা অনেক বেশি। আমাদের উৎপাদিত ফল শেরপুরের চাহিদা পূরণ করে শেরপুরের বাইরেও বিক্রি হবে।
আত্নপ্রত্যয়ী অন্য কৃষি উদ্যোক্তা উদয় কুমারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিদিনই অনেকেই আমাদের ফলবাগান দেখতে আসেন। এতে আমাদের ভালো লাগে। কেউ ফল কেনেন, আবার কেউ ফল বাগান করার সহায়তা চান। আমি চাকরির পাশাপাশি চিন্তা করি মানুষকে কীভাবে বিষমুক্ত ফল খাওয়ানো যায়। ফল চাষ ভালো হওয়ায় একটি নার্সারি ফলের বাগান করছি। বর্তমানে আমাদের ফলের বাগানে ২৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যে নতুন প্রকল্প গুলো শুরু হলে আরও শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই বছরে আমি ফল বিক্রির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছিলাম তার চেয়ে বেশি ফল উৎপাদন ও বিক্রি করে ফেলেছি।
শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাক্তার মোহিত কুমার দে বলেন, আমরা ফলের বাগান নিয়মিত পরিদর্শন করে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এখানকার ফল চাষে বিদেশি ফল আমদানি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। আগে আমাদের ধারণাই ছিল না শেরপুরের সমতল ভূমিতে মাল্টা চাষ হবে। তবে তাদের স্বাফল্য উন্যদের উৎসাহিত করবে। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগীতা তাদের দেয়া হবে। আশাকরি শেরপুর ফল চাষে স্বয়ংসম্পূর্ন হবে।