শেরপুরে আদালতের ডিক্রিপ্রাপ্ত জমিতে চাষাবাদে বাধার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
শুক্র, 31.03.2023 - 04:58 PM
Share icon
Image

শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নে এক বৃদ্ধ কৃষকের ৩৮শতক জমি চাষ করতে গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই কৃষকের নাম মো. জমশেদ আলী (৬৫)। স্থানীয় মো. আব্দুর রহমান গং এই চাষাবাদে বাধা দিচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। ৩১ মার্চ শুক্রবার দুপুরে সূর্যদি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ফসলি ক্ষেতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আশপাশের সকল জমিতে চাষাবাদ হলেও ফাঁকা পড়ে রয়েছে ওই বিরুধর্পুণ জমিটি। ফলে সরকার ঘোষিত এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবেনা নীতিতে যেমন ভেস্তে যাচ্ছে অপরদিকে অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছেন ওই বৃদ্ধ কৃষক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত পূর্বক ব্যহস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেয়া হয়েছে।  

ভুক্তভুগি কৃষক মো. জমশেদ আলী (৬৫) বলেন, ‘তারা আমাদের জমি দীর্ঘদিন বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছিল। লম্বা সময় কোর্টের বারান্দায় ঘুরে ন্যায় বিচার পেয়েছি। ডিক্রিপ্রাপ্ত হওয়ার পরে নির্বাহী মেজিস্ট্রেট, আদালতের কর্মকর্তা ও পুলিশ এসে আমাদের ভূমির দখল বুঝিয়ে দিয়ে গেলেও আমরা আমাদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারছি না। আমরা জমিতে প্রবেশ করতে গেলেই তারা দা-ফলা দিয়ে আক্রমন করে। আমি পাট ও ভুট্টার বীজ বপনের জন্য ক্ষেতে গেলে তারা আমাদের হামলা করে। তাদের মহিলারাও মাঠে এসে হামলা করে এবং উল্টা নারী নির্যাতন মামলা দেবে বলে হুমকি দেয়। ইতিমধ্যে আমাদের নামে একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা আমাদের হয়রানি করছেন।

ভুক্তভোগীর ছেলে নূর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের জমিতে এখনও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর লাগানো লাল পতাকা রয়েছে। এর পরও আমরা আমাদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারছি না। আব্দুর রহমান শেরপুর শহরে থাকে এবং একটি শ্রমিক সংগঠনের রাজনীতি করে। সেই ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের নির্যাতন করে। আমরা গ্রাম থেকে শহরে প্রবেশ করতে পারিনা। সে রাস্তায় আটকিয়ে আমাদের মারধর করে। তার দেয়া মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে আমার বাবা কোর্ট চত্বরের বাইরে মারধরের স্বীকার হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি মামলাও চলমান আছে। আমরা প্রতিনিয়ত তার হুমকির স্বীকার হচ্ছি। আমরা এর বিচার চাই।”

অভিযোগের বিষয়ে জানালে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ গুলো সঠিক নয়। তাদের জমি চাষাবাদে আমি কোনো বাধা দেইনি এবং কোন ধরনের হামলাও করিনি। তবে তাদের জমির সাথে আমাদের বসতভিটা। তারা সেখানে বেকু দিয়ে ১২/১৩ ফুট গর্ত করায় আমার জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিধায় আমি কোর্টে মামলা করেছি। 

এবিষয়ে শেরপুর জেলা জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি এডভোকেট গোপাল চন্দ্র পাল বলেন, এটা আদালতের রায়কে অবমাননা করা। আদালতের বুঝিয়া দেয়া জমিতে প্রবেশ করতে না দেয়া একটা অপরাধ। তবে এই ব্যাপারে তিনি পুনরায় আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।

এব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, ‘বিষয়গুলো আমাদের জানা নেই। কেউ আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

Share icon