শেরপুর প্রকাশ্যে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলায় আহত হাবিবুল্লাহ হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে হত্যার উদ্দেশ্যে ফিল্মি কায়দায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ২৯শে মে উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় ৩০ মে বিকেলে ঝিনাইগাতী থানায় মামলা দায়ের করেন হাবিবুল্লাহর বড় ভাই মোঃ আব্দুল হাকিম ফকির। ওই হামলায় গুরুতর আহত হাবিবুল্লাহ (৪৫) হাসপাতালে যন্রণায় কাতরাচ্ছেন।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে হাবিবুল্লাহ'র একটি হাত ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং হাত ও পায়ের আঙ্গুল কেটে ঝুলে আছে। রক্তাক্ত কাটা জখমসহ হাতে-পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য জখমের যন্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। হাবিবুল্লাহ ওই গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে।
আহত হাবিবুল্লাহ এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, "ওইদিন সকালে ১১ ঘটিকায় বাড়ী থেকে পার্শ্ববর্তী কালিবাড়ী বাজারে যাচ্ছিলেন হাবিবুল্লাহ। বাড়ির পার্শ্ববর্তী জনৈক জবেদ আলীর বাড়ীর সামনে পৌঁছা মাত্র প্রতিবেশী মৃত জবান আলীর ছেলে রানা মিয়া (৩১) গংরা সকলে মিলে দা, লোহার রড, বাঁশের লাঠি ইত্যাদি মারাত্বক প্রাণনাশক অস্ত্র সজ্জিত অবস্থায় হাবিবুল্লাহকে ঘিরে ফেলে। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফিল্মি কায়দায় পথ রোধ করে বেধড়ক পেটাতে থাকে তারা। এসময় তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও নিকটজনরা ছুটে এসে তাদের কবল থেকে হাবিবুল্লাহকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় শেরপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।"
এদিকে হাবিবুল্লাহর উপর সন্ত্রাসী হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় সংবাদ পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, "এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী রাণা মিয়া এবং তার পুরো পরিবার নানা অপরাধে জড়িত। কোন বৈধ আয়ের উৎস না থাকা সত্ত্বেও তাদের ব্যায়বহুল জীবনযাপনে অনেকেই বিষ্ময় প্রকাশ করেন।" তারা আরও জানান, "রাণা মিয়ার বাড়িতে সবসময় বাইরের মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।"
এদিকে ঘটনার কারণ হিসেবে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রানা মিয়া অবৈধভাবে হাবিবুল্লাহদের ৪০ শতাংশ পৈত্রিক জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার পাঁয়তারা করছে আসছে। ইতিপূর্বে রানা মিয়ার বিরুদ্ধে খুন জখম, ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন এবং চাঁদাবাজির ও মারপিটের অভিযোগে একাধিক মামলা করেন হাবিবুল্লাহ। তন্মধ্যে একটি মামলায় দোষ স্বীকার করে রানা মিয়ারা বিজ্ঞ আদালতে জরিমানা প্রদান করে।
এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে রানা মিয়া কিছুদিন থেকে হাবিবুল্লাহকে খুন জখম করবে বলে শাসিয়ে আসছিল। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এসব সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।