শেরপুরের শ্রীবরদীতে পাচার হওয়া নারীকে যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার
শেরপুরের শ্রীবরদী থেকে বিয়ের প্রলোভনে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়া এক নারীকে অভিযোগ পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে জামালপুর যৌন পল্লী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ৯ আগস্ট গভীর রাতে তাকে যৌন পল্লী থেকে উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানায় আনা হয়। আজ ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকালে ভিকটিমকে শেরপুর আদালতে জবানবন্দি গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিমের মা-বাবা ঢাকায় গার্মেন্টস এ কাজ করে। সেই সুবাদে ভিকটিমও তার মা-বাবার সাথে ঢাকায় বসবাস করে। তার বাবা-মার সাথে একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর নিজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. লোকমান মিয়া (২৩)। একই সাথে কাজ ও বসবাসের সুবাদে ওই যুবতীকে মাঝে মাঝে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সময় নানা প্রলোভন দেখিয়ে যাচ্ছিল সে। এই ঘটনা জানাজানি হলে ভিকটিমের বাবা তাকে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে রেখে যায়। যেন তাদের মধ্যে কোন সম্পর্ক তৈরি হতে না পারে। কিন্তু এতে লোকমান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে সে মেয়েটির গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আগের মত বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। মেয়েটির এর আগে জেলার পার্শ্ববর্তী উপজেলায় বিয়ে হলেও বনিবনা না হওয়ায় তারা আলাদা ছিলো। এই সুযোগকে সে কাজে লাগিয়ে মেয়েটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় নিয়ে অবশেষে জামালপুর জেলার যৌন পল্লীতে নিয়ে বিক্রি করে দেয়।
ভিকটিমের পরিবারের দাবি, আমরা মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছি। ঘটনা জানাজানি হলে তার সংসার ভেঙ্গে যাবে বিধায় আমরা গোপনে খুজাখুজি করছি। পরবতর্ীতে গত ৫ আগষ্ট একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে ভিকটিমের মায়ের মোবাইল নাম্বারে একটি ফোন ফোন আসে। সেই ফোনে মেয়ের আর্তচিৎকার শুনা যায়। পরবতর্ীতে আরও অন্য দুইট নাম্বার থেকে মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের কাছে ফোন আসে। তখন বলা হয় আপনাদের মেয়েকে যৌন পল্লীতে বিক্রি করা হয়েছে। এ ঘটনা জানার পর গতকাল শ্রীবরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
ভিকটিমের মা বলেন, পুলিশ এত তারাতারি আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারবে এঁা আমার বিশ্বাস ছিলনা। আমার মেয়েকে যে বিক্রি করে দিয়েছিলো আমি তার ফাসি চাই।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জামালপুর যৌনপল্লীতে একটি টিম পাঠাই। নানা সমস্যা মোকাবেলা শেষে আমরা আমরা তাকে উদ্ধার করি। এ ব্যাপারে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন- ২০১২ এর ১১/১১ ধারায় মামলা গ্রহন করেছি। এঘটনায় অপরাধীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান আছে।