শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ৭ম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বাগেরভিটা দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে (১৪) অপহরণ করেছে ৪ সন্তানের জনক মুন্তাজ আলী (৪০) নামের এক বখাটে। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে ঝিনাইগাতী থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন ওই কিশোরীর পিতা দিনমজুর ইদ্রিস আলী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দিনমজুর পিতার ওই কিশোরী ছাত্রীকে প্রতিবেশী মুন্তাজ আলীর বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে মাদ্রাসায় যাতায়াত করতো। এই সুযোগে তাকে প্রায়ই প্রেম নিবেদন ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত মুন্তাজ আলী।
এনিয়ে মুন্তাজ আলীর পরিবারের লোকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার দেওয়ায় মুন্তাজ আলী ক্ষিপ্ত হয়ে রবিবার বিকেলে মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে ভিকটিমকে জোরপূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ৩ জনকে স্বনামে এবং অজ্ঞাত ২/৩ জনকে বিবাদী করে ঝিনাইগাতী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিযুক্ত মুন্তাজ আলীর দু'জন সন্তান রয়েছে এবং অপর দু'জন সন্তান মারা গেছে। সে একজন জোয়ারী।
অভিযুক্তর স্ত্রী শেফালী বেগম জানান, স্বামীকে অনেক বুঝিয়েও নিবৃত্ত করতে পারেননি। প্রতিবাদ করলেই আমাকে মারধর করেন। এখন সে পালিয়ে বেড়াচ্ছ। আমি সন্তান্দের নিয়ে সংসার কিভাবে চালাবো?
প্রতিবেশী ইয়াকুব আলী (৬৫), মোঃ সাজু (৪০) ও আবু বক্কর সিদ্দিক বাবু (৬৪) বলেন, ছোট এই অবুঝ মেয়েটি গরীব বলেই তার উপর এই অন্যায় করার সাহস পেয়েছে মুন্তাজ আলী।
বাগেরভিটা দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুর রহমান বলেন, "আমি ঘটনাটি শুনে খুবই মর্মাহত হয়েছি। মেয়েটি খুবই মেধাবী ছাত্রী এবং তার ক্লাসের শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে তার রোল নম্বর দুই।"
এবিষয়ে ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, "রাতেই মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসে তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য সহযোগিতা চেয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। আমি ঘটনাটি মুঠোফোনে ঝিনাইগাতী থানায় অবহিত করেছি। মেয়েটি খুবই মেধাবী ছাত্রী। তাকে উদ্ধার করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা কামনা করছি এবং এই ঘটনায় দুষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।'
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া ছুটিতে থাকায় ওসি তদন্তের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ওসি তদন্ত আবুল কাশেম বলেন, " বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে এস আই ফরিদ আহমেদকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। "
এবিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ফরিদ আহমেদ বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে জানতে পেরেছি ভিকটিমকে অভিযুক্ত মুন্তাজ নিয়ে গেছে। এখনো মামলা রেকর্ড করা হয়নি। ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।