শ্রীবরদীতে সংখ্যালঘু পরিবারকে অবরুদ্ধ করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
শেরপুরের শ্রীবরদীতে ল্যান্ড সার্ভে কোর্টের রায় ও হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রানীশিমুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ও উপজেলা সহকারি কমিশনার ( ভূমি) মেশকাতুল জান্নাত রাবিয়া সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের বসত বাড়ির টিনের বেড়া ভেঙ্গে আঙ্গিনায় কাটাতারের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের ভায়াডাঙা বাজারের ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু পরিবারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই পরিবারের পুত্রবধূ পারবর্তী রানী রাজভর।
তিনি লিখত বক্তব্যে বলেন, পৈত্রিক সূত্রে ২৫ শতাংশ জমিতে আমার শ্বশুর, শ্বাশুরি ও আমরা বসবাস করে আসছি। বিআরএস রেকর্ড ভুলের কারণে আমরা কোর্টে মামলা করি। ল্যান্ড সার্ভে কোর্টের রায় ও আদেশ আমাদের পক্ষে দেন।
পরে জেলা প্রশাসকের উচ্ছেদ নোটিশের প্রতিবাদে হাইকোর্টে আবেদন করলে হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দেন। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত গত মঙ্গলবার দুপুরে রানীশিমুল-তাতিহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ও উপজেলা সহকারি কমিশনার ( ভূমি) মেশকাতুল জান্নাত রাবিয়া অতর্কিতভাবে বাড়িতে এসে আঙ্গিনার টিনের বেড়া খুলে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদেরকে অবরোদ্ধ করে।
ওইসময় আমার শ্বাশুরি রিনা রাজভর ও আমাকে দুধের শিশু সহ গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে জোড় করে পুলিশ ভ্যানে তুলে কয়েক ঘন্টা আটকে রাখেন। পরদিন বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফতেখার ইউনুস এসে কাঁটাতারের বেড়া খুলে দেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন ওই সংখ্যালঘু ভুক্তভোগী পরিবারের কোর্টে মামলার বাদী ক্ষিরু মোহন রাজভরের স্ত্রী রিনা রানী রাজভর, ছেলে সুমন রায় রাজভর, মেয়ে রুমি রাজভর, ওই পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন সহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, এ্যসিল্যান্ড সার এসেছিলেন। আমি সাথে গিয়েছি। তার নির্দেশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছিল।
মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, জমিদার গোপালদাস চৌধুরীর কাছে ১৯৫২ সালে ১৪২ নং আর এস দাগে ২৫ শতাংশ জমি পত্তন নেন রাম রাতিয়া রাজভর। পরবতীর্তে তার একমাত্র সন্তান বিশ্বনাথ রাজভরকে ওয়ারিশ রেখে তিনি মৃত্যুবরণ করে। বিগত আর.ও.আর জরিপের সময় ওই জমির রেকর্ড বিশ্বনাথ রাজভরের নামে না হয়ে রেকর্ড করা হয় সরকারী ১নং খাশ খতিয়াতে। এর পর বিশ্বনাথ ১৯৮৪ সালে বাদি হয়ে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করে। এতে সে দুই বার ডিক্রীপ্রাপ্ত হয়।
পরবর্তীতে বিশ্বনাথ রাজভরের মৃত্যুর পর তার সন্তানেরাই ভোগদখলে রয়েছেন। কিন্তু বিআরএস জরীপ কাজের সময় সেই চক্রটি একই ভাবে আবার সরকারের নামে রেকর্ড করে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে সহকারী জজ আদালতে শ্রীবরদীতে মামলা করে তার ছেলে ক্ষিরু কুমার রাজভর। সেখানেও রায় পায় তারা। পরবতীর্তে ২০০৫ সালে আপিল করে সরকার। পরবতীর্তে তারা উচ্চ আদালতের স্বরনাপন্য হলে আদালত তার উপর স্থগিতাদেশ দেয়।