শেরপুরে স্কুলের ১১ শতক জমি বেদখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ
শেরপুর পৌর শহরের দিঘারপাড় মহল্লায় ব্যক্তি মালিকানাধীন বসতভিটার জমিতে ১১১নং দিঘারপাড় সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের জায়গা হিসেবে প্রমাণ করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল পূর্ব শত্রুতার জেরে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ওই স্কুলের ৩২ শতাংশ জমির ভিতরে মাত্র আঠারো শতাংশ জমি স্কুলের দখলে থাকলেও যারা প্রকৃত স্কুলের জমি বেদখল করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অপরদিকে স্কুলের পশ্চিম পাশে ১১ শতক জমিতে দাতার ভাতিজি গত ২০ বছর যাবত স্কুলের জমি বেদখল করে একটি টিনের বাড়ি নির্মাণ করে বসতি স্থাপন করেছে। এ ব্যাপারে অদৃশ্য কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।
আমাদের গ্রামের প্রতিপক্ষ পূর্ব শত্রুতার কারণে আমাদেরকে স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হয়রানি করছে, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (৪ মে) দুপুরে সরজমিন পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের এমন অভিযোগ করেছেন স্কুলের দক্ষিণ পাশের জমির মালিক ভুক্তভোগী আলহাজ্ব মো: ফারুক আহাম্মেদ ও তার ভাই মনিরুজ্জামান মনি।
ভুক্তভোগী ফারুক আহাম্মেদ জানান, অত্র বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের প্রাচীর ঘেরা বসতবাড়িতে তিনি ও তার ভাই মনিরুজ্জামান পরিবার নিয়ে ১৯৭১ সাল থেকে বসবাস করে আসছে। ক্রয়সূত্রে এই জমির মালিকানা তাদের বলে তারা দাবি করেন। স্কুল কর্তপক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে নকশা অনুযায়ী আমরা পৌর সার্ভেয়ার দ্বারা এই জমি পরিমাপ করিয়েছি এবং সার্ভারের রিপোর্ট অনুযায়ী জমি সঠিক অবস্থানে আছে। এখন আমার জমিকে স্কুলের জমি বলে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি চাই স্কুলের জমির সঠিক পরিমাপ হউক। কারণ এই বিদ্যালয়ের জমি দাতা মৃত গরীবুল্লাহ মৌলবী ৩২ শতাংশ জমি দান করলেও বর্তমানে স্কুলের দখলে আছে মাত্র ১৮/১৯ শতাংশ জমি। বাকি পশ্চিম ও উত্তরাংশের জায়গা দাতার আত্মীয়রা বসত তুলে প্রায় ২০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। সরকার ওই জমি উদ্ধার না করে আমার জমিতে এসে হয়রানি করছে। আমি চাই তদন্তের মাধ্যমে স্কুলের প্রকৃত জমি পুনরুদ্ধার হোক।
ওই এলাকার সাবেক কাউন্সিলর ও ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আমির হোসেন বাদশা বলেন, আমি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে দুটি টয়লেট নির্মাণ করেছি। দক্ষিণ পাশে আর কোন জায়গা ওই স্কুলের নেই। বরং বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে স্কুলের ১১ শতক জমিতে দাতার ভাতিজি গত ২০ বছর যাবত একটি টিনের বাড়ি করে বসতি স্থাপন করেছে। এছাড়াও স্কুলের উত্তর পাশে কিছু জমি বেদখল হয়ে আছে, সেগুলো উদ্ধার করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ফখরুল বলেন, গরীবুল্লাহ এই স্কুলের জমি দাতা তার বাবার বাড়ি ভিটা সহ সর্বমোট ৬৩ শতাংশ জমি দুই দাগে তার পিতা-মাতার অবর্তমানে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ওয়ারিশ হিসেবে রেখে যান। পখ্যান্তরে গৌরিবুল্লাহ মৌলভী একাই ৩২ শতাংশ জায়গা স্কুলের নামে লিখে দেন। এটা অন্যান্য ওয়ারিশদের অজান্তে ভোগদখলে আছে। গরীবুল্লাহ মৌলভী ওয়ারিশ সূত্রে এবং B,R,S record মুলে২১ শতাংশ জায়গা প্রাপ্য এবং এই জায়গা কাউকে দিতে পারে সেই সূত্রে একুশ শতাংশ জায়গার মালিক স্কুল। বাকি জমি অন্য ভাইবোনেরা মালিক। স্কুলের জমি ২১ শতাংশ বাকি ১১ শতাংশ জমি গরীবুল্লাহ মৌলভীর দুই ভাতিজির নামে খারিজ হয়।
এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওবায়দুল্লাহ বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গা বেদখল হয়ে থাকলে তা উদ্ধারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এছাড়াও স্কুলের জমি যারা বেদখল করে রেখেছে তাদের সবার জমি পরিমাপ করে স্কুলের জমি উদ্ধার করা হবে।