বিদ্যালয় ভবন নদীগর্ভে বিলীন ॥ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নীচে পাঠদান
সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
সোম, 20.11.2017 - 02:51 PM
এস.এম হোসাইন আছাদ, জামালপুর প্রতিনিধি ॥ যমুনার করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের দু’টি ভবন। তবু থেমে নেই শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষকদের অদম্য আগ্রহেই খোলা আকাশের নীচে পাঠদান চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী ৫০ নং ডাকাতিয়া মেন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমনই চিত্র। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কি.মি. দূরে যমুনা নদীর ওপারে সিরাজগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী ডাকাতিয়া মেন্দা গ্রাম। ১৯৩৮ সালে যমুনার দুর্গম এ চরাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় ৫০নং ডাকাতিয়া মেন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২২৬ জন্য কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। চলতি বন্যায় বিদ্যালয়ের ভবনসহ, মাঠ ও রাস্তা প্লাবিত হয়। গত ২৫ জুলাই (মঙ্গলবার) যমুনার প্রবল তীর ভাঙনে বিদ্যালয়ের দু’টি ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যমুনার ভাঙনে বিদ্যালয়ের দু’টি ভবন ও সব মালামাল নদী গর্ভে চলে গেছে।
৩ মাস ধরে পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকলেও কোন উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবুও শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে শিক্ষকরা স্থানীয় মসজিদ মাঠে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান করাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই বেঞ্চ নেই শিক্ষকদের বসার চেয়ার-টেবিল। এলাকাবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু পাটের চট ও প্লাস্টিকের মাদুরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন দাঁড়িয়েই।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বপন, শামীম, সজীব ও মুক্তা জানায়, ‘মাটিতে বসে পড়তে খুব কষ্ট হয়, রোদ লাগে। বৃষ্টির দিনে প্রায়ই দৌড়ে মসজিদে যেতে হয়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিম বাদশা বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় কষ্ট করে মসজিদ মাঠে পাঠদান করাতে হচ্ছে। শিক্ষা কার্যক্রমের কোন মালামালই নেই। এতে পড়ালেখা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও কমে গেছে।
পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় বলেন, ‘ডাকাতিয়া মেন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান স্বাভাবিক রাখতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি টিনসেট ঘর উত্তোলন করে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সংশি¬ষ্ট দপ্তর থেকে ৩ লাখ ৯৯ টাকা আমরা বরাদ্দ পেয়েছি। আমরা ইন্জিনিয়ারদের কে বলেছি তারা একটা প্রাথমিক ধারনা দিলেই আমরা উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে টাকা তুলে দিবো যা দিয়ে অস্থায়ী ভাবে একটা ঘড় তৈরি করা হবে।