জামালপুরে বিএনপি নেতা শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের ৫০তম জন্মদিন পালিত
সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
মঙ্গল, 02.01.2018 - 05:35 PM
এস.এম হোসাইন আছাদ, জামালপুর প্রতিনিধি ॥ বিশেষ মোনাজাত, কেক কাটা ও মিষ্টিমুখ আয়োজনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের ৫০তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। জামালপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে রাত সাতটায় জাতীয়তাবাদী জেলা ওলামাদল তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামালপুর জেলা ওলামাদলের সভাপতি ও জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা কাজী মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জামালপুর শহর ওলামাদলের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ। অনুষ্ঠান পরিচলনা করেন জেলা ওলামাদলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম রব্বানী। পরে শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটেন এবং নেতা-কর্মীদের কেক ও মিষ্টি খাওয়ান। এ সময় তার সহধর্মিনী মাসুমা আরমিন মিতু ও ছয় বছর কয়সী একমাত্র পুত্র আহলুল¬াহ ওয়াসেল তার পাশে ছিলেন।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে জামালপুর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপাতি মো. আমজাদ হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল হক খান দুলাল, সাবেক বিশেষ বিষয়ক সম্পাদক লোকমান আহাম্মেদ খান লোটন, জামালপুর শহর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লিয়াকত আলী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন বাবুল, জামালপুর জেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক শেখ আব্দুস সোবহান, জেলা যুবলদের যুগ্মআহ্বায়ক ফিরোজ মিয়া, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম খান সজিব, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার ইসলাম কর্ণেল ও জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক আব্দুল হালিমসহ বিএনপি অঙ্গদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন এবং জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বিএনপিনেতা শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন ১৯৬৮ সালের এই দিনে জামালপুর পৌরসভার রশিদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তারা সাত ভাই আর পাঁচ বোন। তাদের পিতা মো. আব্দুল গফুর এবং মা রমিছা খাতুন বেঁচে নেই।
প্রসঙ্গত, শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন তার জীবনের ৫০ বছরপূর্তিরর মুহূর্তে বিগত দীর্ঘ টানা ২৬ বছর ধরেই রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন তিনি। বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থাতেই তিনি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি জাসদসমর্থিত ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতির নেতৃত্ব দেন। ১৯৯২ সালে তিনি ওই একই ছাত্র সংগঠনের জামালপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হন এবং জামালপুরের ছাত্ররাজনীতিতে মনোযোগী হন।
এরপর শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯৪ সালে তিনি জামালপুর শহর বিএনপিতে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি তার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক বিচক্ষণতার মধ্য দিয়ে ২০০৪ সালে জামালপুর শহর বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জামালপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাাদক নির্বাচিত হন।
জামালপুর পৌরসভার ২০১১ সালের নির্বাচনেও তিনি বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচত হন। জামালপুর জেলা বিএনপির নেতৃত্ব শূন্যতার মুহূর্তে মাঠ পর্যায়ে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে বেগবান করাসহ রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় নেতা-কর্মীদের পাশে থাকায় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হন। ২০১১ সালে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য পদ লাভ করেন। ২০১৬ সালে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ লাভ করেন।
জামালপুরে তিনি টানা ২৩ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম দিকের টানা প্রায় ১০ বছর বিএনপির একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর বাকি টানা প্রায় ১৩ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পেয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। বিএনপিনেতা শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন একজন আইনজীবী। তিনি জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির একজন সক্রিয় সদস্য। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উপদেষ্টা ছাড়াও তিনি জামালাপুরের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ ক্রীড়াঙ্গনেও তার অবদান রয়েছে।
জন্মদিনের অনুষ্ঠান শেষে বিএনপিনেতা শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন এক সাক্ষাতকারে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমার জীবন আর রাজনীতি আমার রক্তের সাথে মিশে গেছে। গণমানুষের জন্য রাজপথের রাজনীতির মধ্য দিয়েই উঠে এসেছি। বর্তমান সরকারের হাত থেকে দেশের গণমানুষের মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করতে আমি প্রস্তুত রয়েছি। আমার লক্ষ্যই হলো জনকল্যাণে ও দেশের কল্যাণে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা। তিনি তার আজকের জন্মদিনের এই শুভদিনে জামালপুর জেলার সর্বস্তরের নাগরিকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।