রৌমারীতে ইউনিয়ম ভূমি কর্মকতার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দূর্নীতির অভিযোগ - গণশুনানি করবে প্রশাসন।

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
বৃহস্পতি, 01.10.2020 - 04:39 AM
Share icon
Image

শফিকুল ইসলাম, রৌমারী , কুড়িগ্রাম। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) রুহুল্লাহ। অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই তহশিলদারের বিরুদ্ধে।
 
ভূমি অফিসের চৌকাঠ পার হলেই তহশিলদারের নিজের করা আইন মানতে হয় ভূমি সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে। কেউ প্রতিবাদ করলেই ওই ভূমি কর্মকর্তা স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ দালালচক্রকে লেলিয়ে দেন সেবা নিতে আসা লোকজনের ওপর।

এলাকাবাসীর অভিযোগ  দালাল মোজাফফর  হচ্ছেন এসব অপকর্ম করানোর মূল হোতা। তিনি গ্রামের সাধারন  মানুষকে ভূল ভাল বুঝিয়ে অতিরিক্ত  এসব টাকা দিতে ভূমি অফিসকে সহযোগীতা করেন। বিনিময়ে তিনিও সেখান থেকে  টাকার ভাগ পেয়ে থাকেন। 

আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

এ বিষয়ে গণশুনানি হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মো. রুহুল্লাহ শৌলমারী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই নানা অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগে শৌলমালী ইউনিয়নের বাতারগ্রাম এলাকার কৃষক অফর উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, জমির খাজনা বাবদ তার কাছ থেকে নগদ ৭ হাজার টাকা নিয়ে ৯৯০ টাকার একটি রশিদ হাতে ধরিয়ে দেন তহশিলদার রুহুল্লাহ।

একই এলাকার মৃত দুখু মাহমুদের ছেলে রফিয়াল হক জানান, জমির খাজনা বাবদ ৩ হাজার টাকা নিলেও রশিদ দেন ১ হাজার টাকার এবং হোল্ডিং বাবদ দাবি করেন ৬০০ টাকা। এদের মতো একই অভিযোগ ওই ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা বেশির ভাগ মানুষের।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, নাম খারিজের বেলায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি-১ হাজার ১৫০ হলেও অতিরিক্ত হিসেবে ৮ থেকে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ওই তহশিলদার। দাবিকৃত ঘুষের অর্থ দিতে অস্বীকার করলে নানা টালবাহানা করে জমির মালিকদের হয়রানি করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী উপজেলার বড়াইকান্দি বাজারে তহশিলদার রুহুল্লাহর অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিল শেষে ওই তহশিলদারকে নিজ অফিসেই ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। পরে অফিস থেকে কৌশলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন ওই তহশিলদার।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ম ভূমি সহকারী কর্মকতা  রুহুল্লাহ  বলেন, আমার বিরুদ্ধে এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমার সুনাম ক্ষুন্ন  করার অপচেষ্টা। 

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ’

রৌমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করা হবে। এ ব্যাপারে দ্রুতই দিন, তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’

Share icon