বিলুপ্ত হতে পারে মানবজাতি ! বিশ্বজুড়ে কমছে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা

সম্পাদক-প্রকাশকঃ মারুফুর রহমান মারুফ
বৃহস্পতি, 15.11.2018 - 09:01 AM
Share icon
Image

 

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে কমছে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা। অনেকেই এর জন্য দায়ী করছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়তে থাকা তাপমাত্রাকে। কিন্তু কতটা গুরুতর আকার ধারণ করেছে এই সমস্যা?

পুরুষের স্বাভাবিক প্রজনন ক্ষমতার ওপর চারপাশের পরিবেশের প্রভাব নিয়ে আলোচনা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। খ্যাতনামা ব্রিটিশ শেফ গর্ডন ব়্যামসে এই সমস্যা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন বহু আগে।

দীর্ঘক্ষণ কোলে ল্যাপটপ রাখলে, সাওনাতে বেশি সময় কাটালে বা গরম হতে থাকা মোবাইল ফোন পকেটে বেশিক্ষণ রাখলে কমতে পারে পুরুষের শুক্রাণু উৎপাদন ক্ষমতা। এমন তথ্যই উঠে এসেছে সাম্পতিক এক গবেষণায়।

গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীজুড়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। ফলে, একদিকে বাড়ন্ত গরম, আরেক দিকে ল্যাপটপ-মোবাইল-সাওনা'র অত্যধিক ব্যবহারের ফলে কমছে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা। হয়ত একদিন এভাবেই লুপ্ত হয়ে যেতে পারে গোটা মানব প্রজাতি।

গরমের মোকাবিলা

লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অ্যালান বারেকা এক গবেষণায় বলেছেন, গ্রীষ্মকালে যৌনক্রিয়া বৃদ্ধির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ‘টেম্পারেচার শক' বা আকস্মিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি জন্মের হার কমিয়ে দিচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত ৮০ বছরের তথ্যের উপর ভিত্তিতে করা এই গবেষণায় দেখা যায়, শীতকালের পর ৯ মাস পেরিয়ে গেলে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে শিশু জন্মের হার অনেক বেশি থাকে। সেই তুলনায় গ্রীষ্মকালীন মাসে গর্ভধারণের হার বেশ কম।

গবেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রার তীব্রতা এই হারকে আরো বাড়তে সাহায্য করবে। কিন্তু এই সমস্যা শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়।

যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, প্রজনন ক্ষমতা কমার এই প্রবণতা কিছু বিশেষ পোকা-মাকড়ের মধ্যেও বর্তমান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গবেষকেরা প্রশ্ন তুলছেন, এভাবেই কী আস্তে আস্তে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে একের পর এক প্রজাতির প্রাণী?

অবলুপ্তি বনাম প্রজনন ক্ষমতা

যুক্তরাজ্যের পরিবেশবিদ ম্যাথিউ গেজ বলেন, জনসংখ্যার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাবের বিশেষ ভূমিকা থাকবে। কিন্তু কিছু প্রজাতির প্রাণী লুপ্ত হওয়া থেকে নিস্তার পেলেও কমতে থাকা প্রজনন ক্ষমতার সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হবে না। এটাও ভাববার বিষয়।

২০১৭ সালের একটি গবেষণা বলছে, ১৯৭৩ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। লো স্পার্ম কাউন্ট বা অক্ষম শুক্রাণুর সমস্যার কারণ হিসাবে সেখানেও দেখানো হয়েছে, পারিপার্শ্বিক প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও জীবন যাপনের ধারাকে।

এই সমস্যার মোকাবিলা করতেই গেজ ও তার সহকারীরা এখন নতুন রাস্তা খুঁজছেন। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের ডিএনএ পর্যবেক্ষণ করে কিছু গঠনমূলক ফলাফল তারা বের করতে চান।

যদি তাদের গবেষণা থেকে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রজনন ক্ষমতার হ্রাস হওয়া বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য উন্মোচিত হয়, তাহলে হয়ত আরো জোরদার হবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধের লড়াই। আপাতত এই আশাতেই কাজে ব্যস্ত যুক্তরাজ্যের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গেজ ও তার গবেষকের দল।

ডিডব্লিউ।

 

Share icon