শেরপুর হরিজন পল্লীতে হচ্ছে ৭ তলা ভবন, পূণর্বাসিত হচ্ছে ৩৬ পরিবার
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে শেরপুরের হরিজনরা পাচ্ছেন সাততলা বিশিষ্ট পাকা বাসভবন। সেখানে পূনর্বাসিত হবে শেরপুর পৌরসভার হরিজনপল্লীর বাসিন্দা ৩৬ পরিবার। শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকার হরিজনপল্লীর বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এমন তথ্য জানান পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌরসভার সম্মেলনকক্ষে নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ কমিটি এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে হরিজনপল্লীতে এলজিইডি’র তত্বাবধানে নির্মিত হবে ৭ তলা বিশিষ্ট ভবনটি। ইতোমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে। এলজিইডি’র পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য হরিজনপল্লীতে জায়গাও পরিমাপ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাসখতিয়ানের ওই জায়গার অনাপত্তি পত্রও প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া হরিজন পল্লীর পুকুরটি কিভাবে সংরক্ষণ করা যায় এবং সেখানকার শিশুদের শিক্ষার জন্য একটি পাঠকেন্দ্র স্থাপন করার বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন।
জনউদ্যোগ কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় হরিজনপল্লীর বাসিন্দারা সেখানে বসবাসকারি হেলা ও বাসফোর সম্প্রদায়ের মধ্যে সমন্বয় করে ভবনটিতে বরাদ্দ দেওয়ার দাবী জানানো হয়। সেইসাথে পুকুরটি তাদের ধর্মীয় ও জীবনযাপনের অনুসঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করে সেটি সংরক্ষনর দাবী জানান। হরিজনপল্লীর বাসিন্দারা সেখানে একটি শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, মাদক নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন সমস্যাদি সমাধানেরও দাবী তুলে ধরেন। মেয়র সেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। হরিজন নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নন্দ কিশোর চৌধুরী, বিমল বাসফোর, মুক্তা হরিজন, মিলন হরিজন প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন, শিক্ষাবিদ শিব শংকর কারুয়া, কমিউনিস্ট পার্টির সদর সভাপতি সোলায়মান আহমেদ, লেখ জ্যোতি পোদ্দার, নারী নেত্রী আইরীন পারভীন, আঞ্জুমান আলম লিপি, শিক্ষিকা আয়শা সিদ্দিকা বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মাঝে সংস্কৃতি সংগঠক এসএম আবু হান্নান, শিক্ষক আশিকুর রহমান আজিজ, নৃ-জনগোষ্ঠির নেতা সুমন্ত বর্মন, সাংবাদিক হাকিম বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় বক্তারা হরিজন পল্লীর বাসিন্দাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বন জানান। একইসাথে হরিজনদেরকেও পুরনো কুসংস্কার ও ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন করে আধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।