ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধন প্রয়োজন: শ. ম রেজাউল করিম
বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গুরুত্ব থাকলেও যে ধারাগুলোর অপব্যবহার হচ্ছে তা সংশোধন করার প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বিভিন্ন সময় সংঘটিত বিভিন্ন সাইবার অপরাধের উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, গুজব, অসামাজিক কার্যকলাপ, মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ, রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী অপপ্রচার রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দেশের নাগরিক হিসেবে সবার সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং একজন এর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলে তার প্রতিকার এবং দ্রুততার সাথে নিস্পত্তি হওয়া দরকার।
বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮: চড়া মূল্য দিচ্ছে কারা?’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিজিএস এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, এনটিভির বার্তা প্রধান জহিরুল আলম এবং বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জিল্লুর রহমান জানান, তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর পরিবর্তিত রূপই হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮। সিজিএসের গবেষনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত এ আইনের আওতায় ৮৩৫ মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় সর্বমোট অভিযুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২২ জন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিভিন্ন ধারার অপব্যবহারের কথা তুলে ধরে তিনি এই আইনের বাতিল চেয়েছেন। সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, সভ্য সমাজের জন্য আইন দরকার। শুধু মানুষ না পশুপাখি ও পরিবেশ রক্ষার্থেও আইন প্রয়োজন। তেমনি সাইবার অপরাধীদের দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করার জন্য আমাদের দক্ষ লোকবল নেই।
তিনি আরও বলেন, এই আইনের আওতায় এখন পর্যন্ত হওয়া মামলাগুলো পর্যালোচনা করে অপব্যবহার রোধ করার জন্য এই আইনটি সংশোধন করা দরকার।অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘কালো আইন’ উল্লেখ করে বলেন, হ্যাকিং সংক্রান্ত ধারা বাদে সর্বক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন দরকার। এটি একটি দ্ব্যর্থবোধক আইন, যা যৌক্তিক আইনগত লক্ষ্য পূরণ করেনি। সভাপতির বক্তব্যে ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী এই আইনের সকল প্রয়োগই অপপ্রয়োগ বলে মন্তব্য করেন। বর্তমানে এই ভীতির রীতি সাইবার স্পেসকে মাইন ফিল্ডে পরিণত করছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন।